শুক্রবার, ডিসেম্বর ১, ২০২৩
প্রচ্ছদইন্টারভিউকলকাতার জেলে পাঠাবেন না : সালাউদ্দিন কাদের

কলকাতার জেলে পাঠাবেন না : সালাউদ্দিন কাদের

সাক্ষীদের কাউকে ‘কলকাতার জেলখানায় না পাঠাতে’ প্রসিকিউটরকে অনুরোধ করেছেন একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তার বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাফাই সাক্ষীদের সাক্ষ্য দেয়ার আদেশ দেয়ার পরে তিনি একথা বলেন।
খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম এর।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদেরের বিরুদ্ধে মামলায় প্রসিকিউশনের সাক্ষ্য গ্রহণ বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে।
১৭ জুন মামলার সাফাই সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর আদেশ দিয়েছে বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীর নেতৃত্বাধীন এই ট্রাইব্যুনাল।
সাক্ষ্যগ্রহণের পর সালাউদ্দিন কাদের তদন্ত কর্মকর্তাকে কিছু প্রশ্ন করতে চাইলে আদালত তা নাকচ করে দিয়ে বলেন, প্রশ্ন থাকলে আইনজীবীর মাধ্যমে করুন।
এরপর তিনি আইনজীবী এএইচএম আহসানুল হক হেনার মাধ্যমে চার-পাঁচটি প্রশ্ন করেন।
তখন একটি আবেদন উপস্থাপনের জন্য প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম অনুমতি চাইলে আসামি পক্ষেরও দুটি আবেদন রয়েছে বলে জানান আইনজীবী ফখরুল ইসলাম।
তবে আসামিপক্ষের সাক্ষী তালিকা সংক্রান্ত হওয়ায় তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তির জন্য প্রসিকিউশনের আবেদনটি শোনার অনুরোধ জানান জেয়াদ আল মালুম।
তখন সালাউদ্দিন কাদের বলেন, “আর আমার পিটিশন আরো জরুরি। বাজেট অধিবেশন চলছে, আমার সেখানে যাওয়া প্রয়োজন।” আদালত জানতে চায় আসামিপক্ষের আবেদনগুলো কী কী।
আইনজীবী ফখরুল ইসলাম বলেন, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সংসদে যোগদানের জন্য চিঠি পেয়েছেন, তিনি কেন সেখানে উপস্থিত হতে পারছেন না, সে ব্যাপারে আদালতের আদেশের প্রয়োজন রয়েছে।
এ বিষয়ে আগেই একটি আবেদনে নিষ্পত্তি হওয়ায় আদালত আবারো একই আবেদন তোলা নিয়ে প্রশ্ন করেন।
উত্তরে ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবার সংসদ অধিবেশন বসলে তিনি চিঠি পান, তাই প্রতিবার এ ব্যাপারে আবেদন করার প্রয়োজন হয়।
এরপর আসামি পক্ষের সাক্ষীর তালিকা বাতিল করার জন্য আদালতে আবেদন জানান প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম।
এ তালিকায় হাই কোর্টের বিচারপতি, শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদসহ এক হাজার ১৫৩ জনের নাম ছিলো।
প্রসিকিউটার বলেন, সাফাই সাক্ষীদের তালিকায় নামের পাশাপাশি কোন অভিযোগের সাফাইয়ে তারা সাক্ষ্য দেবেন, তা উল্লেখ করার বিধান রয়েছে। এ তালিকায় কোনো সাক্ষীর ক্ষেত্রে তা উল্লেখ নেই।
এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, প্রসিকিউশনের এ আবেদনটি ‘মডিফাইড’ আকারে গ্রহণ করা হলো। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী সাহেবসহ পাঁচজন সাফাই সাক্ষ্য দিতে পারবেন।
এ সময় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী বলেন, “মাই লর্ড, তাদের সাক্ষীর সংখ্যাটা একটু দেখবেন। তারা সাক্ষ্য দিয়েছে ৪১ জন, আমার সাক্ষী মাত্র পাঁচজন হবে?”
এ সময় বিচারপতি ফজলে কবীর বলেন, “আমরা সবদিক বিবেচনা করেই এ আদেশ দিয়েছি। এ মামলার যেসব অভিযোগ সেগুলো প্রমাণ (প্রুভ) করার শতভাগ দায়িত্ব প্রসিকিউশনের। অভিযোগ ‘ডিসপ্রুভ’ করার দায়িত্ব প্রসিকিউশনের না। কোনো অ্যালিবাই বা আপনাদের কোনো কিছু জানা থাকলে তা উপস্থাপন করবেন।”
আদেশের পরে আদালতে শুনানি মুলতবি ঘোষণার পরপরই প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুমের উদ্দেশ্যে করে সালাউদ্দিন কাদের বলে উঠেন, “মালুম সাহেব, একটা অনুরোধ। আর যা-ই করেন, দয়া করে সাক্ষীদের কলকাতার জেলখানায় পাঠাবেন না।”
এর উত্তরে জেয়াদ আল মালুম রসিকতা করে বলেন, “কলকাতা না, পাকিস্তানে পাঠাবো।”
“কলকাতা-পাকিস্তান কোনোখানেই পাঠাবেন না দয়া করে,” বলে ওঠেন সালাউদ্দিন কাদের।’

আরও পড়ুন

সর্বশেষ