সোমবার, মে ৬, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েচট্টগ্রাম বিভাগপুলিশের হেফাজতে খুনের মামলায় কারাগারে এসআই-কনস্টেবল

পুলিশের হেফাজতে খুনের মামলায় কারাগারে এসআই-কনস্টেবল

গ্রেফতারের পর রোকনুজ্জামান (৪০) নামে নারী নির্যাতন মামলার এক আসামিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত পাঁচলাইশ থানার বরখাস্ত হওয়া এসআই আমির হোসেন ও কনস্টেবল মোছলেমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। হত্যার অভিযোগে বাকলিয়া থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় মঙ্গলবার দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করা হলে মহানগর হাকিম রহমত আলী তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বলে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় আমির হোসেন ও মোছলেমকে গ্রেফতার করে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

গত ১৮ জুন রাতে নগরীর বাকলিয়া থানার সৈয়দ শাহ রোড থেকে গ্রেফতারের পর পাঁচলাইশ থানা পুলিশের হেফাজতে রোকনুজ্জামানের মৃত্যু হয়। ২৫ জুন রোকনুজ্জামানের স্ত্রী শিমু আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানার এসআই আমির হোসেন, বাকলিয়া থানার এএসআই মোহাম্মদ এনায়েত হোসেনসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

আসামিরা হলেন, পাঁচলাইশ থানার এসআই আমির হোসেন, বাকলিয়া থানার এএসআই মো.এনায়েত হোসেন, পাঁচলাইশ থানার তিন কনস্টেবল মিজানুর রহমান (নম্বর-২৩৯০), মোছলেম (৪০৪৫) ও খোকন মিয়া (৩৯৫৮), আনসার কনস্টেবল শাহীনূর আলম (১৯১৬৭৭৫), পাঁচলাইশ থানার গাড়িচালক কনস্টেবল আকবর (৭১৭৮), পুলিশ সোর্স মো. জামাল ও হুমায়ন কবির এবং সাদা পোশাকে ঘটনাস্থলে থাকা সাধারণ নাগরিক হারুনুর রশিদ ডিউক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪৪৮, ৩০২, ৩৮০, ৩৫৪ এবং ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

এ ঘটনায় সোমবার রাতে আমির হোসেন ও মোছলেমকে এবং মঙ্গলবার পাঁচলাইশ ও বাকলিয়া থানায় কর্মরত পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। বরখাস্তকৃত অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন- বাকলিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. এনায়েত হোসেন, পাঁচলাইশ থানার কনস্টেবল মিজানুর রহমান, মোছলেম, খোকন মিয়া, গাড়িচালক ও কনস্টেবল আকবর এবং প্রেষণে নিযুক্ত আনসার সদস্য শাহীনূর আলম। পুলিশ সদস্যদের নগরীর দামপাড়া পুলিশলাইনে রাখা হয়েছে। আনসার সদস্যকে নিজ বাহিনীকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বাকলিয়ার একটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সাবেক বীমা কর্মকর্তা ও ফ্ল্যাট বিক্রির মধ্যস্থতাকারী রোকনুজ্জামানের বিরুদ্ধে গত ৫ জুন সাজেদা বেগম নামে এক গার্মেন্টস কর্মী পাঁচলাইশ থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতারের জন্য ১৮ জুন গভীর রাতে তার বাসায় যান তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পাঁচলাইশ থানার এসআই আমির হোসেন। বাসা থেকে বের করে পুলিশ গাড়িতে তোলার পর রোকনুজ্জামান গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং শরীর এলিয়ে দেন। পুলিশ দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

পরবর্তীতে রোকনুজ্জামানের চাচাতো ভাই হারুনুর রশিদ দাবি করেন, গ্রেফতারের জন্য রোকনুজ্জামানের বাসায় প্রবেশ করে পুলিশ তার বুকে লাথি মেরেছে। এতে তিনি গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। রোকনুজ্জামানকে গ্রেফতারের সময় পুলিশের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার এক পর্যায়ে গ্রেফতার হন প্রতিবেশী ও বিমা কর্মকর্তা আজিজুল হক। তিনি জানান, রোকনুজ্জামানকে গ্রেফতারের পর সোর্স জামাল তাকে মারধর করেছেন। ঘটনার পর পুলিশ সোর্স জামালকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। তবে পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ