শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদদেশজুড়েচট্টগ্রাম বিভাগনগরীর সাতটি প্রবেশপথসহ ২৪টি স্পর্শকাতর পয়েন্টে ১১০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন

নগরীর সাতটি প্রবেশপথসহ ২৪টি স্পর্শকাতর পয়েন্টে ১১০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন

চট্টগ্রাম নগরীর সাতটি প্রবেশপথসহ ২৪টি স্পর্শকাতর পয়েন্টে ১১০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করেছে নগর পুলিশ। ক্যামের‍ায় ধারণ করা দৃশ্য দেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্য সিএমপিতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষও খোলা হয়েছে। সোমবার প্রথম রোজার দিন থেকেই ক্যামেরাগুলো চালুর পরিকল্পনা আছে নগর পুলিশের। তবে যান্ত্রিক ও প্রযুক্তিগত সমস্যায় সোমবার সম্ভব না হলে দু’একদিনের মধ্যে তা পুরোপুরি চালু করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ক্যামেরা স্থাপন কার্যক্রমের সমন্বয়কারী নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার বাবুল আক্তার  বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব দিয়ে পুরো নগরীকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার আওতায় আনার কাজ শুরু করেছে সিএমপি। প্রাথমিকভাবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ২৪টি স্পটে আমরা ক্যামেরা স্থাপন করেছি। এ কার্যক্রম চলমান থাকবে। মোট ৫০টি স্থানে আমরা ক্যামেরা স্থাপন করব।

মাঠ পর্যায়ে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ তত্তাবধানকারী নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রেনিং) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তিন ধরনের ক্যামেরা আমরা স্থাপন করছি। এর মধ্যে আছে পিটিজেড ক্যামেরা যেটা গাড়ির নম্বর সংরক্ষণ করবে। ফেস ডিটেক্টর আছে যেগুলো মিটিং-মিছিল, সমাবেশসহ জনসমাগমের চিত্র নিখুঁতভাবে ধারণ করবে। ১২০০ টিবিএল ক্যামেরা আছে যেগুলো ওভারঅল ভিউ ধারণ করবে।

নগর পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিকভাবে সিটি গেইট, একে খান মোড়, অলংকার মোড়, জিইসি, মুরাদপুর, দু’নম্বর গেইট, বহদ্দারহাট, অক্সিজেন মোড়, সাগরিকা, সিইপিজেড মোড়, রাহাত্তারপুল, শাহ আমানত সেতু, নিউমার্কেট, কাজির দেউড়ি মোড়সহ ২৪টি পয়েন্টে ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে ৪ থেকে ৫টি করে ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

নগরীর তিনটি গুরুত্পূর্ণ স্পটে লাগানো হয়েছে অত্যাধুনিক পিটিজেড ক্যামেরা। তিনটি স্পটের মধ্যে আছে-সিইপিজেড, শাহ আমানত সেতু এবং বন্দর টোল প্লাজা। বাকি স্পটগুলোতে দু’টি ফেস ডিটেক্টরের পাশাপাশি বসানো হয়েছে দু’টি টিবিএলও। আবার পিটিজেড ক্যামেরার সঙ্গে ফেস ডিটেক্টর এবং টিবিএলও বসানো হয়েছে।

নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রেনিং) জাহাঙ্গীর আলম  বলেন, পিটিজেড ক্যামেরাগুলো আশপাশের ৩শ’ মিটারের মধ্যে গাড়ির নম্বরসহ সার্বিক চিত্র ধারণ করতে পারবে। এরপর আরও কমপক্ষে দুশ’ মিটার এল‍াকার সার্বিক চিত্র ধারণের ক্ষমতা আছে ক্যামেরাগুলোর। ফেস ডিটেক্টর এবং টিবিএল ক্যামেরাও দু’শ মিটারের চেয়ে বেশি জায়গার চিত্র ধারণ করতে পারবে। সূত্র জানায়, সিএমপির সদর দপ্তরে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ কক্ষে ১২টি মনিটরসহ আনুষাঙ্গিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করা হয়েছে। ক্যামেরার সঙ্গে সার্ভার সংযোগের কাজ শেষ হলেই মনিটরিং কক্ষ পুরোপুরি প্রস্তুত হবে। সোমবার সার্ভার সংযোগের কাজ শেষ হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। সহকারী কমিশনার (ট্রেনিং) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রতিটি মনিটরে কমপক্ষে তিনটি স্পটের চিত্র দেখা যাবে। কন্ট্রোল রুমে ২৪ ঘণ্টা কর্মকর্তারা থাকবেন। তার‍া বিভিন্ন স্পটের চিত্র দেখে তাৎক্ষণিকভাবে স্পটে থাকা পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দেবেন। এতে অপরাধ দমন ও ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে।

সূত্র জানায়, ক্যামেরা স্থাপনের কাজটি করছে থ্রি এক্সপ্লোরার নামে একটি সংস্থা। আর স্পট থেকে স্পটে ক্যামেরায় এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে ফাইবার অপটিক সংযোগের কাজ করছে বেসরকারী ক্যাবল ‍অপারেটর প্রতিষ্ঠান চিটাগং কমিউনিকেশনস লিমিটেড (সিসিএল)। সিসিএল’র পরিচালক (অপরাশেন) শ্যামল কুমার পালিত বলেন, নগর পুলিশকে সার্বিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে আমরা ফাইবার অপটিক স্থাপনের কাজ করছি। প্রায় ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় আমরা কানেকটিভিটির কাজ শেষ করেছি।

নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার বাবুল আক্তার বলেন, ক্যামেরা কেনা এবং স্থাপনে যে খরচ হচ্ছে তা সিএমপি’র নিজস্ব তহবিল থেকেই যোগান দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নগরীতে গাড়ি চুরি, ছিনতাই, অপহরণসহ বিভিন্ন দুর্ধর্ষ অপরাধের অধিকাংশই সংঘটিত করে বাইরের দুর্বৃত্তরা। তারা নগরীতে এসে অপরাধ সংঘটিত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। এতে অপরাধীদের শনাক্ত করতে পুলিশকে যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়। ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানোর পর গাড়ির নম্বরসহ সার্বিক চিত্র পর্যালোচনা করে অপরাধের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যাবে। পাশাপাশি অনেক অপরাধের আগাম তথ্য কিংবা ইঙ্গিতও মিলবে বলে মনে করছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ