বুধবার, এপ্রিল ২৪, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর: জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা চায় বাংলাদেশ

প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর: জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা চায় বাংলাদেশ

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণসহ বড় অবকাঠামো খাতে বাংলাদেশ জাপানের সহায়তা চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এবারের জাপানের সফরের উদ্দেশ্য ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে জাপানের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা চাওয়া। এটি আমাদের জন্য জরুরি। এছাড়া জাপানের সঙ্গে একটি বিশদ অংশীদারিত্ব চুক্তি করতে সরকার আগ্রহী। শনিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও সচিব শহীদুল হকসহ উর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। তার সঙ্গে ১০৯ জন সঙ্গী থাকছেন। এর মধ্যে ৪৫ জন ব্যবসায়ী। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দায়িত্ব দেওয়ার পর এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রথম দ্বিপাক্ষিক বিদেশ সফর বলেও জানান মাহমুদ আলী।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বড় অবকাঠামো খাতে জাপানের সহায়তা চাওয়া হবে। এর মধ্যে, পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন, তংগ্যা ব্যারেজ নির্মাণ, যমুনার নিচ দিয়ে মাল্টি পারপাস টানেল নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু সেতুর সমান্তরালে আরেকটি রেল সেতু, ইস্টার্ন বাইপাস তৈরি এবং ঢাকার চারদিকের নদী উদ্ধার প্রকল্পে জাপানের সরাসরি বিনিয়োগ সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ। সরকার জাপান থেকে এসব প্রকল্পে মোট কি পরিমাণ সরাসরি বিনিয়োগ সহায়তা (ওডিএ) চাইছে তা তাৎক্ষণিকভাবে  স্পষ্ট করতে পারেননি মন্ত্রী। তিনি শুধু বলেন, আলোচনা করে অর্থায়নের পরিমাণ চূড়ান্ত করা হবে। এটা এখনই বলা যাচ্ছে না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারতের ভাবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে আর তেমন কোনো অগ্রগতি এখনই হয়নি। নরেন্দ্র মোদী শপথ নিক। এরপর এটি নিয়ে কাজ করা হবে। মন্ত্রী বলেন, জাপানে প্রধানমন্ত্রীর সফর চূড়ান্ত থাকায় নরেন্দ্র মোদীর শপথ অনুষ্টানে প্রধানমন্ত্রী যেতে পারছেন না। কারণ আমাদের পররাষ্ট্র নীতি এটি সমর্থন করে না, বলছিলেন মাহমুদ আলী।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, সফরকালে জাপানের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে উৎসাহিত করা হবে। যাতে করে বাণিজ্য বাড়ে। এছাড়া জাপানের কাছে বাংলাদেশে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠাকেন্দ্র (পিস বিল্ডিং সেন্টার) স্থাপনের প্রস্তাব করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ আলী বলেন, বিশদ অংশীদারিত্ব চুক্তি কি কি বিষয়ে হবে তাও এখনই বলা যাচ্ছে না। আমরা চুক্তির বিষয়ে আগ্রহী। এটি আলোচনা করে ঠিক করা হবে। গভীর সমুদ্রবন্দর ও পদ্মাসেতুতে জাপানের সহায়তা সরকার চাইবে কিনা জানতে চাওয়া হয় মন্ত্রীর কাছে। জবাবে তিনি বলেন, পদ্মাসেতুর বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট। তবে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে সহায়তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। যদিও আলোচ্যসূচিতে এই বিষয়টি নেই। সরকার তার পররাষ্ট্রনীতিতে ‘পুব’কে  গুরুত্ব দেবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতির লক্ষ্য হচ্ছে, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। আমরা সবাইকে নিয়ে চলতে চাই। ‘পূর্ব-পশ্চিম’ বুঝি না।

এসময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, ২০০৭ সালে দেশে ৬১টি জাপানি কোম্পানির বিনিয়োগ ছিল। বর্তমানে তা ১৭৬টি দাঁড়িয়েছে। আরো ২০টি কোম্পানি বিনিয়োগের জন্য স্থান চেয়েছে। সবদিক বিবেচনা করে এবারের জাপান সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো নতুন মাত্রায় পৌছে দিবে।

জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ২৮ মে দেশে ফিরবেন। সফরকালে তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বাইরেও জাপানের সম্রাট, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এছাড়া জাপানপ্রবাসী বাংলাদেশিদের এক সংবর্ধনায় বক্তৃতা করবেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ