শনিবার, মে ৪, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়র‌্যাব বাতিল করেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন : খালেদা জিয়া

র‌্যাব বাতিল করেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন : খালেদা জিয়া

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

এই সরকার পচতে শুরু করেছে, আর একটু পচলেই বিএনপি কর্মসূচি দেবে বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, অনেকেই বলেন, বিএনপি কর্মসূচি দেয় না কেন? দেব, সময় হলেই দেব। এই সরকার আরেকটু পচুক। তখন দেব। তারা পচতে শুরু করেছে। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আইনজীবীদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান। গুম, খুনের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবীদের কর্মসূচি বাধার মুখে পড়লে তা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে তা আয়োজন করা হয়। খালেদা জিয়া সোয়া বারোটার দিকে সমাবেশ মঞ্চে আসেন।

তিনি বলেন, আমি কারও পরোয়া করি না। ৯ বছর এরশাদের শাসন দেখেছি। আমার সঙ্গে আল্লাহ আছেন। সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা কেউই নির্বাচিত নন। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, র‌্যাব বাতিল করেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেন, সবাইকে আইনের প্রতি সমান অধিকার দিতে হবে। তিনি বলেন, আইন হল আন্ধা। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দেখে যেন বিচার না হয়,সেজন্যই চোখ বাধা। কিন্তু এখন সেটা নাই। খালেদা জিয়া বলেন, আমার নামে চার মামলাও চলবে, হাসিনার নামে ১৫টি মামলাও চালাতে হবে। সেগুলো কোথায়?

কাউকে গ্রেপ্তারের আগে তার পরিবারকে লিখিতভাবে জানানোর ও গ্রেফতারের সময় সাক্ষী রাখার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, র‌্যাব, ডিবি’র সাদাপোশাকে হানা দিয়ে মাঝরাতে কোনো গ্রেপ্তার হবে না। সাক্ষী রেখে, সেই ব্যক্তির পরিবারকে লিখিতভাবে জানিয়ে গ্রেপ্তার করতে হবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা তা করবে না, অতি উৎসাহী হয়ে যারা এই সরকার যা বলছেন, তাই করছেন, তার‍া দায় এড়াতে পারবেন না। খালেদা বলেন, দেশে শুধু কান্নার রোল। শুধু স্বজনহারানোর ব্যথা। মায়ের চোখের পানির জন্য একদিন অনেক ভুগতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা দেখেছি, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাবেশ করতে না দেওয়ায় আমরা ছোট্ট পরিসরে গুলশানে করেছি। স্বজনরা মনে করে, এখনো তারা বেঁচে আছে। খালেদা বলেন, এখন সর্বত্রই লাশ আর লাশ। এজন্য শেখ হাসিনাকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। কারণ এই দিনই দিন নয়, দিন আরও আছে। খালেদা বলেন, এই অবৈধ সরকার দিয়ে কোনো কিছু হবে না। শুধু দুর্নীতি বাড়বে, শুধু মুখে বড় বড় কথা। বাংলাদেশের এখন কোনো সুনাম নেই।

তিনি বলেন, আপনারা নিজেরা নিজেরা খুনোখুনি করবেন, নিজেরা নিজেরা মরবেন। কারণ আল্লাহর একটা বিচার আছে। এমন ভাবে পড়বেন, আর ওঠা সম্ভব হবে না। খালেদা বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। বেশি বাড়াবাড়ি ভালো নয়। কথায় আছে,অত বেশি বেড়ো না, ঝরে পড়ে যাবে।

খালেদা বলেন, দেশে এখন দুই রকম আইনের শাসন চলছে। তাদের অপরাধের বিচার নাই। ভীত হয়েই সরকার আইনজীবী ও নাগরিক সমাবেশে বাধা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। খালেদা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ঘটনায় কাউকে ধরা হয় নাই। প্রকৃত অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। যাদের ধরেছে, তারাও আছে জামাই আদরে।

ভীত হয়েই সরকার আইনজীবী ও নাগরিক সমাবেশে বাধা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। খালেদা বলেন, সরকার ভীত বলেই এই সমাবেশে বাধা দিয়েছে। এই সরকার অবৈধ। তারা নিজেরা ভয়ে আজ কোনো সমাবেশ করতে দিতে চায় না। তিনি বলেন,  আতঙ্কে সরকার এমন করছে। শনিবার সকাল থেকেই প্রেসক্লাব এলাকায় বিএনপিমনা আইনজীবীরা জড়ো হতে থাকলেও আনুষ্ঠানিকভাবে বেলা এগারোটার দিকে সমাবেশ শুরু হয়।

প্রেসক্লাব মিলনায়তনের এই সমাবেশে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আহমেদ আযম খান, যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, নারায়ণগঞ্জ বিএনপি’র সভাপতি অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, যুবদল সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মাসুদ তালুকদার, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন আহমেদ অসীম, অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট আসিফা আশরাফি পাপিয়া প্রমুখ।

গুম, খুনের প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ব্যানারে আইনজীবীরা সুপ্রিমকোর্টে এ সমাবেশের ডাক দেয়। সমাবেশকে ঘিরে শুক্রবার রাত থেকে সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ঘিরে ফেলে পুলিশ। সমাবেশের মঞ্চ তৈরিতেও বাধা দেওয়া হয়। শনিবার সকাল থেকে পুরো সুপ্রিম কোর্ট এলাকা ঘিরে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এক পর্যায়ে পরিস্থিতি ভিন্নদিকে গড়ায় আইনজীবীদের আটক করা হয়। এরপর সমাবেশ প্রেসক্লাবে সরিয়ে নেওয়া হয়।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ