অভিনেত্রী জিয়া খানের আত্মহত্যার চারদিন পর অবশেষে মুখ খুলল তার পরিবার। গত ৪ জুন মুম্বইয়ের জুহুর ফ্ল্যাট থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় জিয়ার দেহ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, জিয়া আত্মহত্যা করেছেন। জিয়ার আত্মহত্যার পিছনে ‘অবসাদ’ রয়েছে বলে মানতে নারাজ তার স্বজনরা। তাঁর মা রাবেয়া খান জানিয়েছেন, সাংবাদিকরা আমার মেয়ের মৃত্যুর কারণ হিসাবে তার ‘অবসাদ’-কে দায়ী করলেও তা ঠিক নয়। ও কখনও বিষণ্ণ ছিল না।” এমনকী জিয়ার বোন করিশ্মা জানিয়েছেন, “ময়না তদন্তে ওর পেট থেকে মদ, মাদক বা ঘুমের ওষুধ পাওয়া যায়নি।”
বরং জিয়ার আত্মহত্যার জন্য অভিনেতা আদিত্য পাঞ্চোলির ছেলে সুরজ পাঞ্চোলির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কেই দায়ী করছে জিয়ার পরিবার। জিয়ার দুই বোন করিশ্মা ও কবিতা জানিয়েছেন, “জিয়া ও সুরজের সম্পর্ক আমরা মেনে নিতে পারিনি। জিয়া ভুল ছেলেকে ভালবেসে ছিল। ওই সম্পর্ক নিয়ে জিয়া নিজেও তো খুশি ছিল না। মানসিক অসন্তোষ, হতাশা ছিল ওর মধ্যে।” জানা গিয়েছে, জিয়ার মৃত্যুর কয়েকদিন আগে জিয়ার মা রাবেয়া সুরজকে এসএমএস করে জিয়ার থেকে দূরে সরে যেতে বলেছিলেন। এমনকী জিয়ার অন্তিম যাত্রায় সুরজ ও তার পরিবারের উপস্থিতিতেও আপত্তি জানিয়েছিলেন জিয়ার মা রাবেয়া খান। জিয়ার মৃত্যুর পর সুরজ সম্পর্কে কটু মন্তব্য না করলেও বা সুরজকে সরাসরি অভিযুক্ত না করলেও জিয়ার মৃত্যুর কারণ হিসেবে সুরজের অবহেলা ও তাদের সম্পর্কের অবনতিকেই দায়ী করেছে জিয়ার পরিবার।
অন্যদিকে, জিয়ার মৃত্যুতে তাঁর ছেলে সুরজকে ‘ভিলেন’ মনে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন আদিত্য পাঞ্চোলি। তাঁর দাবি, “যদি সুরজ দোষী প্রমানিত হয় তাহলে ওকে ‘ভিলেন’ বলুন। কিন্তু যতক্ষণ তা না হচ্ছে তাহলে সুরজকে ভিলেন বানানো হচ্চে কেন?” প্রসঙ্গত, জিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় সুরজকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে সাম্প্রতিক একটি ব্লগে মন্তব্য করেছেন লেখিকা শোভা দে। তিনি লিখেছেন, “লাইক ফাদার, লাইক সন”। অর্থাৎ বাবার মতই ছেলেও তৈরি হয়েছে। আর এতেই আগুনে ঘৃতাহুতি হয়েছে।
ক্ষুব্ধ আদিত্যর প্রশ্ন, “শোভা দে-র আমাকে আর আমার ছেলেকে নিয়ে কি সমস্যা রয়েছে? উনি ওই মন্তব্য করে কি প্রমাণ করতে চাইছেন? সুরজ ভুল করলে তার শাস্তি পাবে। কিন্তু দোষী প্রমাণ হওয়ার আগেই উনি নিজের ব্লগে আমার ছেলেকে দোষী সাব্যস্ত করতে পারেন না। বাবার মতো…. বলতে উনি কি বোঝাতে চেয়েছেন? সবাই ভুলে যাচ্ছেন, আমাদের প্রত্যেকেরই সন্তান রয়েছে। আপনাদের বাড়িতেও ছেলে, মেয়েরা বড় হচ্ছে। তাদের নিজের মতো চলতে দিন। দোষী প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে আগেভাগে দোষী সাব্যস্ত করবেন না।” তাঁর আরও দাবি, রামায়ণে ‘রাবণ’ ছিলেন ভিলেন। শোলেতে ‘গব্বর সিংহ’। তেমনই প্রত্যেক ইস্যুতেই আমরা ভিলেন খুঁজি। আর এই ঘটনায় আমার ছেলেকে ভিলেন তৈরি করা হচ্ছে।
গত তিনদিন ধরে আমি পরিবারের কর্তা ও একজন দায়িত্ববান বাবা হিসাবে দায়িত্ব সামলেছি। জিয়ার অন্ত্যেষ্টির সময় আমরা উপস্থিত ছিলাম। আমারা কখনোই পরিস্থিতি থেকে পালাতে চাইনি। জিয়া ও তার পরিবার আমাদের বন্ধু। আমরা সেই সম্পর্ক আবার ফিরে পেতে চাই। কারণ কিছু লোক যারা আসল সত্যিটা জানে না তারা এখন আমাদের দুই পরিবারের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন রকম রায় দিচ্ছে। সব মিলিয়ে সুরজ একটি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে বলে মত তাঁর। সূত্র: আনন্দবাজার