রবিবার, মে ১৯, ২০২৪
প্রচ্ছদজাতীয়ভিওআইপি দুর্নীতি: বিটিসিএল এমডিদের বাদ দিয়েই চার্জশিট অনুমোদন

ভিওআইপি দুর্নীতি: বিটিসিএল এমডিদের বাদ দিয়েই চার্জশিট অনুমোদন

প্রায় ৬ শ’ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এসওএম কলিম উল্ল্যাহ এবং সাবেক তিন এমডিসহ প্রভাবশালীদের অব্যাহতি দিয়ে চার্জশিটের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

 বুধবার কমিশনের নিয়মিত সভায় ৩৯ ও ৪০নং মামলার চার্জশিটের অনুমোদিত হয়। দুদকের উচ্চ পর্যায়ের সূত্র  চার্জশিট অনুমোদনের বিষয়ে নিশ্চিত করেন।  মামলার চার্জশিটের বিষয়ে দুদক চেয়ারম্যান মো: বদিউজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। দুদকের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিটিসএলের বর্তমান ও সাবেক এমডিদের বিরুদ্ধে দুদক তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করলেও চার্জশিট থেকে রেহাই পেতে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা জোর তদবির চালিয়েছেন।

 ৩৯নং মামলার চার্জশিট থেকে যারা বাদ

৩৯নং মামলার চার্জশিট থেকে ৮ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন, বিটিসিএলের এমডি এসওএম কলিম উল্ল্যাহ, সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মো. আবু সাইদ খান, সাবেক সদস্য (রক্ষণাবেক্ষণ ও চালনা) প্রকৌশলী মোহাম্মদ তৌফিক, সাবেক জিএম (ওটিআর ও বর্তমানে জিএম, বিটিসিএল-ইস্ট) আনোয়ারুল মামুন, সাবেক সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী (আইটিএক্স), মু. মোক্তার আহমেদ, এ্যারিকসন বাংলাদেশ লিমিটেডের কনটাক্ট ম্যানেজার আসিফ জাহিদ চৌধুরী, সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মাসরুরুল হাকিম এবং প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।

 ৩৯নং মামলার চার্জশিটে যারা আসামি

এ মামলায় ৯ কোটি ৪৯ লাখ ৯০ হাজার ৮৭২ টাকা সরকারি রাজস্ব ক্ষতিপূর্বক আত্মসাতের দায়ে যাদের আসামি করা হয়েছে তারা হলেন, বিটিসিএলের সাবেক বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ খোরশেদ হাসান, মো. হাবিবুর রহমান প্রামাণিক, সাবেক এডিই মো. সাজ্জাদ হোসেন, সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী মনিরা বেগম, সাবেক সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ কায়ছার এবং সাবেক সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী (আইটিএক্স) রোনেল চাকমা।

 ৪০নং মামলার চার্জশিট থেকে যারা বাদ

৪০নং মামলার চার্জশিট থেকে ৭ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে তারা হলেন, বিটিসিএলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. মো. আবু সাইদ খান, সাবেক ভারপ্রাপ্ত এমডি আজিজুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (রক্ষণাবেক্ষণ ও চালনা) প্রকৌশলী মোহাম্মদ তৌফিক, সাবেক জিএম (ওটিআর) আনোয়ারুল মামুন, এলএম এ্যারিকসন বাংলাদেশ লিমিটেডের কনটাক্ট ম্যানেজার আসিফ জাহিদ চৌধুরী, সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মাসরুরুল হাকিম এবং প্রতিষ্ঠানটির সাবেক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।

 ৪০নং মামলার চার্জশিটে যারা আসামি

৫৭৫ কোটি ৩৩ লাখ ৮২ হাজার ৯৭৫ টাকা সরকারি রাজস্ব ক্ষতিপূর্বক আত্মসাতের দায়ে এ মামলার চার্জশিটে আসামি করা হয়েছে ৭ জনকে। যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিটের অনুমোদন দেওয়া হয়েছেন তারা হলেন, বিটিসিএলের সাবেক বিভাগীয় প্রকৌশলী (আইটিএক্স অ্যান্ড ট্রাস্ক) মো. হাবিবুর রহমান প্রামাণিক, সাবেক সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী রোনেল চাকমা, মো: বদিউল আলম এবং সাবেক সহকারী বিভাগীয় প্রকৌশলী ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (আইটিএক্স) আবু হেনা মোস্তফা সালাম।

 দু’টি মামলার চার্জশিটে মোট ১০ জনকে আসামি করে অনুমোদন দেওয়া হয়, যার মধ্যে ৪০নং মামলার চার্জশিটে নতুন অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন আবু হেনা মোস্তফা সালাম। বাকি ৯ জন মামলার আসামিরা এজাহারভুক্ত।

দুদক সূত্র জানায়, গত বছরের নভেম্বরে তদন্তকারী কর্মকর্তা কমিশনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। দীর্ঘ ৪ মাস পর্যবেক্ষণ শেষে কমিশন এ দু’টি মামলার চার্জশিট অনুমোদন দিয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে চার্জশিট আদালতে দাখিল হবে বলে জানায় দুদকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র।

 এছাড়া ৮৩ লাখ টাকা এবং আট কোটি ৬৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়েরকৃত আরো দু’টি মামলা দুদকের তদন্তাধীন রয়েছে। দুদকের সিনিয়র উপ-পরিচালক এস এম সাহিদুর রহমান এবং মাহমুদ হাসান ওই দু’টি মামলার তদন্ত করছেন।  প্রায় ৬০৮ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে গত বছরের ২৯ আগস্ট বিটিসিএলের সাবেক ও বর্তমান পাঁচ এমডিসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করেছিল দুদক।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ