রবিবার, মে ৫, ২০২৪
প্রচ্ছদইন্টারভিউস্বাগত ২০১৪ : দীপ্ত আশায় উদ্ভাসিত নতুন বছর

স্বাগত ২০১৪ : দীপ্ত আশায় উদ্ভাসিত নতুন বছর

ষ্টাফ  রিপোর্টার  (বিডিসময়২৪ডটকম)

ঘড়ির কাটার সঙ্গে সঙ্গে বিদায় নিলো ২০১৩। এলো নতুন বছর। মধ্যরাতের প্রথম প্রহরে সূচিত হলো দীপ্ত আশায় উদ্ভাসিত নতুন বছর। স্বাগত ২০১৪।

একটু আগেই গত হওয়া বছরের দিকে তাকালেই ভেসে উঠে সাভারের রানা প্লাজায় লাশের সারি সারি মুখ, স্বজন হারানোর আর্তনাদ। ইতিহাসের নির্মমতাই না ঘটেছিলো গেলো বছরটিতে। এমন বেদনাদায়ক ইতিহাসের স্বাক্ষী না যেনো নতুন বছরটি।

পোশাক শিল্পে আগুন, হরতাল-অবরোধের নামে নিরীহ মানুষকে পুড়ে মেরে ফেলা, রেলে নাশকতা, রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ অসংখ্য ঘটনা লেখা রয়েছে ২০১৩ সালের ক্যালেন্ডারে।

এমন দুঃস্বপ্নের বছর আর আর চায় না বাংলাদেশ। আজ বর্ষ বিদায়ের মুহূর্তে এ রকম কথাই উচ্চারিত হবে কোটি মানুষের হৃদয়ে।

অনেক ঘটন-অঘটন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চড়াই-উতরাই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী হয়ে মহাকালের গর্ভে হারিয়ে গেলো আরও একটি বছর। দিনপঞ্জিকার শেষ পাতাটি উল্টে গেলো আজ।

রাত পেরোলেই পুবাকাশে উঠবে নতুন সূর্য। এ সূর্য নতুন বছরের, এ সূর্য নতুন দিনের, নতুন স্বপ্নের। নতুন জাগরণের।

দেশের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা এবং রাজনীতির জন্য ২০১৪ সাল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বছরের শুরুতেই ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার এ নির্বাচন সফল করার চ্যালেঞ্জ যেমন আছে, তেমনি অপেক্ষা করছে বিরোধী দল ও জোটকে আস্থায় আনার কঠিন পরীক্ষা। কারণ, নির্বাচন নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থানে আওয়ামী লীগ-বিএনপি জোট। সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিরোধী দল বলছে, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া ১৮ দল কিছুতেই নির্বাচনে যাবে না। দলীয় সরকারের অধীনে দেশে কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে তারা। সমঝোতার চেষ্টা হয়েছে। বিদায়ী বছরের শেষ দিনটি পর্যন্ত তা চলমান ছিল। তবে ঐকমত্য হতে পারেনি দেশের প্রধান দুই দল। ফলে রাজনৈতিক সমঝোতার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা নিয়েই পথ চলা শুরু করেছে ২০১৪ সাল। এটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে শান্তির বারতা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার বছর।

বিদায়ী বছর শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকরের মধ্য দিয়ে শুভ সূচনা করেছে বাংলাদেশ। নতুন বছরে বাকি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করে মাতৃভূমিকে কলঙ্কমুক্ত করার সংগ্রাম করতে হবে। সে লক্ষ্যে নতুন বছরে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বাঙালিকে। মুক্তিযুদ্ধের সকল পক্ষশক্তিকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে নতুন করে লড়তে হতে পারে।

অবশ্য ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে মাঠে নেমেছে। মহাজোটকে আরও শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করারও উদ্যোগ নিয়েছে দলটি। উগ্র জঙ্গীবাদকে শক্তহাতে মোকাবেলার চ্যালেঞ্জ সামনে। সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে মাঠে থেকেই নির্বাচন পর্যন্ত যেতে চায় তারা। বিরোধী দল সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি। হরতাল, অবরোধ ও রাজপথে সহিংসতা চালালেও নিজেদের দাবির পক্ষে জনসমর্থন আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। ফলে কিছুটা হতাশা নিয়েই বছর শুরু হচ্ছে বিরোধী জোটের।
তবে সাধারণ মানুষ নতুন প্রত্যাশা নিয়েই শুরু করেছেন ২০১৪ সাল। তাদের মতে, বৈশ্বিক পটভূমিতে খ্রিস্টীয় নববর্ষের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য উপেক্ষা করার মতো নয় মোটেও। আর তাই বিশ্বের বহু দেশের মতো বাংলাদেশেও ছিল বছর শেষের আনুষ্ঠানিকতা। সে সঙ্গে মধ্য রাতে পাশ্চাত্যের অনুকরণে শহরাঞ্চলে বরণ করে নেয়া হয়েছে নতুন বছরকে। বিশেষ করে তরুণ সমাজের মধ্যে বর্ষবরণ নিয়ে ছিল আগ্রহ। তাদের প্রত্যাশা বছরটি ভাল যাবে। দেশ ও জাতির জন্য বয়ে আনবে মঙ্গল।

নতুন বছরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার শুভেচ্ছা বার্তায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, পুরাতন বছরের ব্যর্থতা ও গ্লানিকে পেছনে ফেলে নব উদ্যমে আমরা সোনালি ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাব_ এ হোক আমাদের অঙ্গীকার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা  তার শুভেচ্ছা বার্তাতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ সোনার বাংলা` গড়ে তোলার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, পুরনো বছরের ব্যর্থতা, গ্লানি, হতাশাকে ঝেড়ে ফেলে নবউদ্যমে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগায় নববর্ষ। পাশাপাশি অতীতের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সুন্দর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে তৎপর হতে পারলে নতুন বছরটি হয়ে উঠতে পারে সাফল্যময়।

এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা দেশবাসীকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ