দেশজুড়ে ছাগল-কাণ্ডে ব্যাপক আলোচিত হয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা ড. মতিউর রহমান। মতিউরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বেনামে পুঁজিবাজারে ২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি এবিষয়ে জানতে বেস কয়েকটি গণমাধ্যমের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে গভর্নরের কাছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হকের মাধ্যমে প্রশ্ন করলে ওই দিনই তিনি তা গভর্নরের কাছে পৌঁছে দেন বলে জানান।
গভর্নরের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি অর্থ সচিব থাকা অবস্থায় মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক বানাতে হস্তক্ষেপ এবং মতিউরের মাধ্যমে বেনামে পুঁজিবাজারে ২৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার বিষয়ে যে অভিযোগ উঠেছে এ বিষয়ে তার মন্তব্য কি।
বুধবার (২৬ জুন) এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল বলেন, যেসব অভিযোগ উঠেছে তা সঠিক না বলে জানিয়েছেন গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
এদিকে সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, ২০২২ সালে মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য তদবির করেছিলেন তৎকালীন অর্থসচিব আবদুর রউফ তালুকদার।
মতিউর রহমান কিছুদিন ধরে আলোচনায় আসেন তাঁর ছেলের কারণে। কোরবানির ঈদে সাদিক অ্যাগ্রো নামের একটি খামার থেকে মতিউর রহমানের ছেলে মুশফিকুর রহমান ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কেনা ছাড়াও ঢাকার বিভিন্ন খামার থেকে ৭০ লাখ টাকার গরু কিনেছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
এর পর থেকে মতিউর রহমানের ছেলের দামি ঘড়ি, গাড়ি, আলিশান জীবনযাপন; মতিউর রহমান ও পরিবারের সদস্যদের নামে রিসোর্ট, শুটিং স্পট, বাংলো বাড়ি, জমিসহ নামে-বেনামে সম্পত্তি থাকার বিষয়ে একের পর এক খবর প্রকাশিত হতে থাকে।
সংবাদপত্র ও সোশাল মিডিয়ায় আলোচিত হওয়া নিয়ে গত ২০ জুন বেসরকারি এক টেলিভিশনে দেওয়া স্বাক্ষাতকারে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের কথা প্রকাশ করেন মতিউর রহমান। তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে শুধু মেয়ের নামে বিনিয়োগ করে ১ কোটি টাকায় ১৪ কোটি টাকা মুনাফা করেছি। এই বাজার থেকে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ বানিয়েছেন বলে নিজেই দাবি করেছেন। বুদ্ধি ও পরিশ্রমের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে কাজে লাগিয়ে বিপুল সম্পদের মালিক হয়েছেন বলেও মতিউর রহমান দাবি করেন।
এরপর ছাগল কাণ্ডের জের ধরে মঙ্গলবার (২৫ জুন) মতিউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিও (বেনিফিশিয়ারি) হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইদিনে তাদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।