গলকাণ্ডে আলোচিত মতিউর রহমান, স্ত্রী লায়লা কানিজ ও ছেলে আহম্মেদ তৌফিকুরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত। দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৪ জুন) ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
এর আগে, রোববার মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়। এনবিআরের সদ্য ওএসডি হওয়া এই সদস্য যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন সেজন্য বিমান, স্থল, সীমান্ত গুলোতে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। মতিউর রহমান এবং তার পরিবারের সদস্যরা যেন বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন অবস্থাতেই দেশত্যাগ করতে না পারে সেজন্য এই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে বলে সরকারের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, ছাগলকাণ্ডে আলোচিত এনবিআরের সাবেক সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মতিউর রহমানের বিপুল দুর্নীতির খবর এখন সারা দেশে ‘টক অব দ্যা কান্ট্রি। দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্তের আগে গণমাধ্যমে তার অপকর্মের দীর্ঘ ফিরিস্তি প্রতিদিনই বেরোচ্ছে।
তার দ্বিতীয় পক্ষের প্রথম সন্তান সাদিক অ্যাগ্রো থেকে একটি ১৫ লাখ টাকার ছাগল কিনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর ছবি দেন এবং এটি ভাইরাল হয়। তখনই আলোচনায় আসে কে এই ইফাত। ইফাতের পিতার খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায় যে, তিনি এনবিআরের সদস্য এবং কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট ড. মতিউর রহমানের পুত্র।
এই মতিউর রহমান আবার সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন। সবকিছু মিলিয়ে তার দুর্নীতির ফিরিস্তি যেন বেনজীর আহমেদের দুর্নীতিকেও হার মানিয়ে দেয়। এরকম বাস্তবতায় মতিউর রহমান যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারে সেজন্য আদালতে আবেদন করে দুদক। আর দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতেই মতিউর রহমান, স্ত্রী লায়লা ও ছেলে তৌফিকুরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদালত।
তবে একাধিক সূত্র বলছে, মতিউর রহমান এবং তার প্রথম স্ত্রী দেশে থাকলেও তার প্রথম স্ত্রীর ঘরে সন্তান বিদেশে অবস্থান করছেন। তার দ্বিতীয় স্ত্রী এবং দুই সন্তান ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ায় চলে গেছেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র ইঙ্গিত করেছে।
এদিকে রোববার (২৩ জুন) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট মতিউর রহমানকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিন মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
এছাড়াও এদিন মতিউর রহমানকে সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদ থেকেও সরিয়ে দেয়া হয়। রোববার (২৩ জুন) অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় তিনি যোগ দেননি।
তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থপাচারের অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।