বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনমিথ্যা তথ্যযুক্ত বেনামী উড়ো অভিযোগের ভিত্তিতে ইউজিসির চিঠি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের...

মিথ্যা তথ্যযুক্ত বেনামী উড়ো অভিযোগের ভিত্তিতে ইউজিসির চিঠি নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে আইআইইউসি কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা

৮ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ ইউজিসির পত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে আইআইইউসি নিয়ে প্রকাশিত সংবাদ আইআইইউসি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।

আইআইইউসি কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে বক্তব্য হলো, দ্বাদশ মহান জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর মনোনয়নে ঈর্ষান্বিত চক্র বিএনপি-জামায়াতের আওয়ামী লীগ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ইউজিসি, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ বিভিন্ন স্থানে বেনামী উড়ো চিঠি দিয়ে বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি তৈরির অপপ্রচার চালাচ্ছে। মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে দুদকে পাঠানো একটি বেনামী, উড়ো চিঠির ভিত্তিতে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

যেখানে আইআইউসি’র জামায়াতের কেন্দ্রীয় নায়েবের আমীর আনম শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোটি কোটি টাকার অর্থ আত্মসাৎ হওয়ার লিখিত অভিযোগ আইআইইউসি কর্তৃপক্ষ দুদকে জমা দিয়েছে প্রায় এক বছর আগে। এই অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে প্রায় হাজার হাজার পৃষ্ঠার নথি দুদকে প্রদান করা হয়। কিন্তু একবছর পরও এই অভিযোগ এখনো দুদক পুরোপুরি আমলে নেয়নি। অথচ সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে বেনামী উড়ো চিঠি দুদক থেকে ইউজিসিতে আসা মাত্রই আইআইইউসিতে পাঠানো হয়েছে।

মুলত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ২০২১ সালের মার্চ মাসে সরকার মাননীয় সংসদ সদস্য, প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামিক স্কলার প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীকে আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেন। এরপরই আইআইইউসিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, অর্থনৈতিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারের নিয়োগকৃত অডিট ফার্ম দ্বারা আইআইইউসি’র আয়-ব্যয় অডিট হয়। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থীর নামে মিথ্যাচার করে ইউজিসিতে বেনামী চিঠি পাঠানো একমাত্র বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসরদেরই কাজ হতে পারে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০- মেনেই আইআইইউসি প্রশাসন সুষ্ঠুভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করছে। ইউজিসি তাদের চিঠিতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০- এর যে ধারা উল্লেখ করেছে, আইআইউসি কর্তৃপক্ষ সে আইন কিছুতেই লঙ্ঘন করেনি। অচিরেই আইআইইউসি প্রশাসনের কাছে ইউসিজির চাওয়া ব্যাখ্যা সঠিকভাবেই দেওয়া হবে।

জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতাদের পরিচালনাধীন অবস্থায় আইআইইউসিতে যেখানে বেতন প্রদানের টাকা থাকতো না, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মকর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা যেখান থেকে আত্মসাৎ করে ফেলা হয়েছে, সেখানে বর্তমানে উদ্বৃত্ত টাকা রয়েছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক, একাডেমিক ও অবকাঠামোগত কোনো সংকট নেই।

মুলত দীর্ঘদিন ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কুক্ষিগত করে রেখেছিল যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ও নিবন্ধন বাতিল হওয়া সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী ও তাদের দোসররা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কখনোই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কথা উচ্চারিত হয়নি।
শুধু তাই নয়, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায়ও কখনও কেউ উচ্চারণ করতে পারেনি মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের কথা, বঙ্গবন্ধুর কথা। এখানে কেউ রাজনীতিও করতে পারতো না জামায়াতের বাইরে। আইআইইউসি ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়া জামায়াতের ইসলামীর দুর্গ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল।

আইআইইউসি বোর্ড অব ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ও সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েই প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী জামায়াতের এই দুই দুর্গ ভেঙে প্রতিষ্ঠা করেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার।

প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীর আইআইইউসিতে জামায়াতের কারণে চলছিল অচলাবস্থা। প্রফেসর ড. আবু রেজা নদভীকে সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান করার পর গত এক বছরেই এ অচলাবস্থা কাটিয়ে উঠেছে। নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের এক বছরের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের লাল তালিকাভুক্তি থেকে উত্তরণ ঘটে এই প্রতিষ্ঠানের। এক প্রকার বন্ধ হতে চলা এই বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রশাসনিক, একাডেমিক ও অবকাঠামো উন্নয়ন এখন সমানতালে এগোচ্ছে।

এই ক্যাম্পাসে একাডেমিক পরিবেশ নিশ্চিতের পাশাপাশি এখন শুরু হয়েছে প্রগতির চর্চাও। দীর্ঘ সময় ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের কোনো বিষয় উপস্থাপিত হতো না। কারণ দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত সংগঠন জামায়াত ইসলামীর নিয়ন্ত্রণে।

বর্তমান ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে প্রথমবারের মতো বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির নেতৃত্ব দেওয়া শুরু করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উদযাপন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উদযাপন, বঙ্গবন্ধু রিসার্চ সেন্টার, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে মুজিব কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিয়ে কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল লেকচার। বর্তমানে একের পর এক কর্মসূচির মাধ্যমে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে চর্চা করা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ পদগুলোতে বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও পদায়ন করা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী ও প্রগতিশীল ব্যক্তিদের। অতীতে এই পদগুলো ছিল জামায়াতপন্থী শিক্ষক ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের ক্যাডারদের নিয়ন্ত্রণে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলকে ঘাঁটি ব্যবহার করেই ২০১৩-২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পেট্রোলবোমা নিক্ষেপসহ নানা নাশকতা চালিয়েছিল জামায়াত-শিবির। অচলায়তন ভেঙে প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর নেতৃত্বে আইআইইউসি যখন একাডেমিক, অবকাঠামো ও আন্তর্জাতিক র‌্যাংকিয়ে একটি ভাল অবস্থান পথে এগোচ্ছে, ঠিক তখনই জামায়াত ইসলামো ও প্রগতিশীলতার মুখোশধারী তাদের কিছু চিহ্নিত সহযোগী আইআইইউসি প্রশাসন নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ