ইতালির রোমে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশীরা নতুন জাতীয় পরিচয়পত্রের আবেদন করতে পারবে। ২৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ, শুক্রবার দূতাবাসের সভাকক্ষে এ বিষয়ে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ইতালিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোঃ মনিরুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে এ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। এছাড়াও ঢাকা থেকে আগত আইডিইএ প্রকল্প (২য় পর্যায়) এর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক এবং নির্বাচন কমিশন সচিলবালয়ের কর্মকর্তাবৃন্দ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, উপস্থিত কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যম কর্মীগণ এবং দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ উক্ত সভায় অংশগ্রহণ করেন।
রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি নির্ভূল ভোটার নিবন্ধন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এই ভোটার নিবন্ধন ব্যবস্থা দেশের সকল নাগরিকের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় একটি অনন্য ও কার্যকর পদক্ষেপ হিসেবে ইতোমধ্যেই দেশে-বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। তিনি বলেন যে, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার এই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ থেকেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।
তিনি আরো উল্লেখ করেন, সরকারের প্রবাসী-বান্ধব নীতির অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন, আইডিইএ প্রকল্প এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দূতাবাসগুলোতে ধাপে ধাপে ভোটার নিবন্ধন ও স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ইতালি সফরকালে ইতালি প্রবাসীদের জন্য উপহার হিসেবে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম চালু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এর ধারাবাহিকতায় দূতাবাসে ইতোমধ্যেই ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম চালু করা হলো।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে নাগরিকের দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে জাতীয় পরিচয়পত্রের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং প্রবাসীদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র প্রাপ্তির প্রক্রিয়াটি সহজ ও দ্রুততর করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্বক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য, রোম দূতাবাসে জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য অনলাইনে ফরম পূরণের সিস্টেম (https://services.nidw.gov.bd) ইতোমধ্যে লাইভ করা হয়েছে। আগামী ২ নভেম্বর ২০২৩ তারিখ থেকে দূতাবাসে আবেদনকারীদের বায়োমেট্রিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা নেওয়ার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট সিস্টেম চালু করা হবে। এসময় দূতাবাসের পক্ষ থেকে তিনটি সুস্পষ্ট বিষয়ে প্রবাসী আবেদনকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়ঃ
- সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, দূতাবাস থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের জন্য কোনোরকম ফী নেওয়া হবে না। পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পূর্ণ ফ্রী।
- দূতাবসে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা প্রদানের পর প্রবাসী নাগরিকের তথ্য যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা পর্যায়ে তদন্ত হবে। পজিটিভ তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর বায়োমেট্রিক তথ্য যাচাইয়ের পর জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত হলে, আবেদনের সময় দেওয়া ইতালির মোবাইল নাম্বারে মেসেজ আসবে। আবেদনকারী নিজেই অনলাইনে প্র্রবেশ করে জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড করে নিতে পারবেন এবং প্রিন্ট করে ব্যবহার করতে পারবেন। ডাউনলোডকৃত জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলে, প্রবাসী নাগরিকগণ দেশে গিয়ে নির্বাচনে ভোট প্রদান করতে পারবেন। স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট হয়ে ঢাকা থেকে আসলে ওয়েবসাইট ও ফেইসবুকের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে এবং তা দূতাবাস থেকে সংগ্রহ করা যাবে।
- দূতাবাস থেকে জাতীয় পত্রের কোনরুপ সংশোধনের সুযোগ নেই। দূতাবাসে কেবল মাত্র নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করা যাবে। অর্থাৎ, আগে যার কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র ছিল না, কেবল তিনিই এখানে আবেদন করতে পারবেন। যদি কারো আগে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকে এবং তিনি দূতাবাসে আবার আবেদন করেন, তথ্য যাচাইয়ের সময় তা ধরা পড়বে এবং আবেদনটি বাতিল হবে।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীগণ মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে ইতালিতে জাতীয় পরিচয়পত্র কার্যক্রম চালুর জন্য সরকারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান এবং তাদের বিভিন্ন পরামর্শ তুলে ধরেন।