শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনচট্টগ্রামে আবার শুরু হয়েছে গ্যাস সংকট

চট্টগ্রামে আবার শুরু হয়েছে গ্যাস সংকট

চট্টগ্রামে আবার গ্যাস সংকট শুরু হয়েছে। মহেশখালী থেকে এলএনজি সরবরাহ এক তৃতীয়াংশ কমে যাওয়ায় চট্টগ্রামের শিল্প, বিদ্যুৎ, বাসা–বাড়ি ও সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহে ধস নামে। পরে বিশেষ রেশনিং ব্যবস্থায় রান্নাঘরের চুলা জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হয়। গ্যাস সংকট বেশ কয়েকদিন থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট পুরনো। চট্টগ্রামের গ্যাসক্ষেত্রগুলোর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে এখানে কম–বেশি সমস্যা ছিল। কুমিল্লা ও সিলেট অঞ্চলের গ্যাস আসা বন্ধ করার পর চট্টগ্রাম বর্তমানে পুরোপুরি আমদানিকৃত এলএনজিনির্ভর। বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি কমে গেলে বা কোনো কারণে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ হলে চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট হয়।

পাইপলাইন ব্যবহার করে বর্তমানে দৈনিক প্রায় ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের জন্য ২৭০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রেখে বাকিটা পাঠানো হয় ঢাকা অঞ্চলে। কিন্তু গতকাল হঠাৎ করে গ্যাসের এই প্রবাহে ধস নামে। মহেশখালীর এলএনজি টার্মিনালে থাকা দুটি এলএনজিবাহী জাহাজের (এফএসআরইউ) একটিতে রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। কিছু যান্ত্রিক সমস্যা সমাধানে বিশেষ এই মেরামত কার্যক্রম শুরু করায় এলএনজি সরবরাহ কমে গেছে। প্রতিদিন এখান থেকে ৭৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হলেও গত দুদিন ধরে তা নেমে আসে ৫শ মিলিয়ন ঘনফুটের কমে। এতে করে চট্টগ্রামের জন্য বরাদ্দকৃত ২৭০ মিলিয়ন ঘনফুটের স্থলে গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হয় ২৩০ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্যাসের প্রবাহ কমে যাওয়ার প্রভাব পড়ে রান্নাঘর থেকে শুরু করে সর্বত্র। গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় চুলা বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় নগরজুড়ে গ্যাসের হাহাকার তৈরি হয়। বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েন। সিএনজি স্টেশনসহ গ্যাসনির্ভর নানা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বাড়ে।

গ্যাস নিয়ে সংকট শুরুর পর কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড পরামর্শ করে গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডের (জিটিসিএল) সাথে। কর্ণফুলী গ্যাসের পক্ষ থেকে কাফকো ও সিইউএফএলসহ বড় ইউনিটগুলোতে সরবরাহ কিছুটা কমিয়ে আবাসন খাতে গ্যাসের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার তাগাদা দেওয়া হয়। এরপর সমন্বয় ও রেশনিং করার ফলে বিকাল তিনটা থেকে আবাসন ও সিএনজি রিফুয়েলিং স্টেশনসহ বাল্ক খাতে গ্যাসের প্রবাহ কিছুটা বাড়ে। রান্নাঘরের চুলা জ্বলার পর মানুষের ভোগান্তি কমে আসে।

কর্ণফুলী গ্যাসের শীর্ষ এক কর্মকর্তা মানুষের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে বলেন, এলএনজি প্রবাহ কমে যাওয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। আরো কয়েকদিন এই সংকট থাকবে। আগামী ২৮ অক্টোবর এফএসআরইউর (ফ্লোটিং সিস্টেম রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট) মেরামত কাজ সম্পন্ন হবে বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ