বৃহস্পতিবার, মে ১৬, ২০২৪
প্রচ্ছদচট্রগ্রাম প্রতিদিনবঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর খুলে দেওয়া হবে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর খুলে দেওয়া হবে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের পর খুলে দেওয়া হবে চট্টগ্রামের প্রথম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আগামী নভেম্বরে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার কথা ভাবছে বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। ইতিমধ্যে মূল ফ্লাইওভারের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। যদিও সার্বিকভাবে এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হয়েছে ৮০ শতাংশ। তবে র‌্যাম্প ছাড়াই শুধু মূল ফ্লাইওভার চালু করা হবে বলে জানা গেছে। নগরীর লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি প্রায় ৮০ শতাংশ। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা। ইতিমধ্যে আগ্রাবাদ পর্যন্ত প্রকল্পের মূল ফ্লাইওভারের কাজ শেষ হয়েছে। আগ্রাবাদ থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত পিলার স্থাপনের কাজও শেষ হয়েছে। বসানো হবে স্ল্যাবও। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে উদ্বোধনের তোড়জোড়। এক্সপ্রেসওয়েটিতে উঠা-নামার জন্য বিভিন্ন স্থানে ১৪টি র‌্যাম্প সংযোজনের কথা থাকলেও কোনো র‌্যাম্পের কাজই শুরু হয়নি। র‌্যাম্প ছাড়া শুধু মূল ফ্লাইওভারের কাজ শেষ করার মাধ্যমে এটি চালু করার চিন্তা করা হচ্ছে। এতে সকল সুবিধা ভোগ করা না গেলেও বিমানবন্দর থেকে লালখান বাজার পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে গাড়ি চলাচল করতে পারবে।

Elevaded-expressway ctg চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস্ বলেন, নভেম্বরের দিকে আমরা মূল ফ্লাইওভারের উদ্বোধনে যেতে পারবো বলে আশা করি। টাইগারপাস পর্যন্ত আমরা কাজ শেষ করবো। মূল ফ্লাইওভারের কাজ শেষ করার পর র‌্যাম্পের কাজ শুরু করা হবে। শুধু মূল ফ্লাইওভারের কাজ হিসাব করলে প্রায় ৯৫ শতাংশ শেষ। বারেকবিল্ডিং পর্যন্ত কার্পেটিংও হয়ে গেছে। টাইগারপাস পর্যন্ত পিলার হয়ে গেছে, স্ল্যাবও বসে যাবে। দ্রউত শেষ করতে দিনে-রাতে কাজ চলমান আছে। টানেলের উদ্বোধনের পর নগরের যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও একটি বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। শহরে প্রবেশ না করেই দক্ষিণ চট্টগ্রামে চলে যাবে অনেক গাড়ি। আবার মূল শহরে গাড়ির চাপ কমলেও পতেঙ্গা জংশনে বাড়বে চাপ। মূলত এই চাপ সামাল দিতেই এক্সপ্রেসওয়ে চালুর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। টানেলের কাজ শেষ হওয়ার আগেই এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ না হওয়াতে প্রথমে অর্ধেক (নিমতলা পর্যন্ত) চালু করার পরিকল্পনা করা হয়। পরে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে এসে এক্সপ্রেসওয়ের মূল ফ্লাইওভারের কাজ শেষ করে উদ্বোধনের প্রস্তাব করে সিডিএ। সে হিসাবে আপাতত পতেঙ্গা থেকে টাইগারপাস পর্যন্ত বা লালখান বাজার হয়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার পর্যন্ত কাজ শেষ করতে চায় সংস্থাটি। এরপর প্রকল্পের উদ্বোধনের মাধ্যমে র‌্যাম্পসহ বাকি কাজ এগিয়ে নেয়ার পক্ষে মত দিচ্ছে সিডিএ। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, নিমতলা পর্যন্ত চালুর যে চিন্তা সেটা এখন আর হচ্ছে না। আগে টাইগারপাস পর্যন্ত কাজ শেষ করা হবে। এরমধ্যে সম্ভব হলে লালখান বাজার হয়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার পর্যন্ত মূল ফ্লাইওভারের কাজও শেষ করার চেষ্টা চলছে। আমরা জানিয়েছি, কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে উদ্বোধন নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।

এদিকে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর নামে করার প্রস্তাব করেছে সিডিএ। গত ২৪ আগস্ট সিডিএ ভবনে আয়োজিত ৪৫৮তম বোর্ড সভায় এ প্রস্তাব করা হয়। ইতিমধ্যে এ প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনের লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় নগরীর লালখান বাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত ‘এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন হয়। প্রথমে প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় তিন হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। তিন বছরের মধ্যে অর্থাৎ ২০১৭ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। দ্বিতীয় দফায় ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তৃতীয় দফায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। এই দফায় সময় বেড়েছে এক বছর। অর্থাৎ ২০২৩ সালের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা। একই সময়ে প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় বাড়িয়ে ৪ হাজার ৩৬৯ কোটি ৭ লাখ ১০ হাজার ৮১৯ টাকা করা হয়। সিডিএ’র এই প্রকল্প যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-র‌্যাংকিন। প্রায় ১৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের, ৫৪ ফুট প্রশস্ত এবং চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে থাকবে ১৪টি র‌্যাম্প। এরমধ্যে জিইসি মোড়ে একটি, টাইগারপাসে দুটি, আগ্রাবাদে চারটি, ফকিরহাটে একটি, নিমতলায় দুটি, সিইপিজেডে দুটি এবং কেইপিজেড এলাকায় দুটি র‌্যাম্প থাকবে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ