ড্রোনের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে, নানা বিধিনিষেধের পরও বাংলাদেশে ড্রোনের ব্যবহার কম নয়। কোনও এলাকার জরিপকাজে, ড্রোন দিয়ে ছবি ও ভিডিও ধারণ হচ্ছে। পর্যটনেও রয়েছে এর ব্যবহার। ড্রোনের ব্যবহার যেহেতু রোধ করা সম্ভব নয়, সেজন্য ড্রোন অপারেশনকে সুনির্দিষ্ট নিয়মনীতির মধ্যে আনার পরিকল্পনা চলছে। এরই মধ্যে ড্রোন নীতিমালা তৈরির কাজও শুরু হয়েছে।
দেশে ড্রোন ওড়ানোর অনুমতি মিললেও ড্রোন আমদানি নিষিদ্ধ। ২০১৫ সালের নভেম্বরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ড্রোন আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
বর্তমানে প্রতি মাসে শতাধিক আবেদন জমা পড়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (সিভিল অ্যাভিয়েশন) কাছে। ড্রোন ওড়াতে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করলে সেটি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করে অনুমতি দেয় বেবিচক। পাঁচ পৃষ্ঠার এই আবেদনপত্রে ড্রোন কোথায় ওড়ানো হবে, কে ওড়াবে, ড্রোনের আকার, নিরাপত্তা বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দিতে হয় আবেদনকারীকে। তবে এজন্য ৪৫ দিন আগে আবেদন করতে হয়। আবেদনের ভিত্তিতে সব যাচাই-বাছাই শেষে ড্রোন ওড়ানোর অনুমতি দেয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)।
বর্তমানে প্রচলিত এই প্রক্রিয়াটি বেশ সময়সাপেক্ষ। এজন্য অটোমেশন করা হচ্ছে। এর ফলে কেউ আবেদন করলে সেটি এক সঙ্গে সব সংস্থার কাছে যাবে, সবার ছাড়পত্র পেলে অনুমতি দেবে বেবিচক। পুরো প্রক্রিয়াটি অনলাইনে হওয়ায় কম সময় লাগবে।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেছেন, ‘যেসব সংস্থা ড্রোন ওড়ানোর অনুমতি চাচ্ছে, আমরা অনুমতি দিচ্ছি। কিন্তু ড্রোন ওড়াতে বিভিন্ন সংস্থার সম্মতির ভিত্তিতে অনুমতি দেওয়া হয়। আমরা এ প্রক্রিয়াকে সহজ করার জন্য অটোমেশন চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছি। অনলাইনে যে কেউ অনুমতির আবেদন করতে পারবেন।’
ড্রোন ওড়ানোর শর্ত ও যোগ্যতা
১৮ বছরের কম বয়সী কেউ ড্রোন উড্ডয়নের অনুমতি পাবে না। মদ্যপানের ৮ ঘণ্টার মধ্যে কেউ ড্রোন ওড়াতে পারবে না। ড্রোনটি কোনও ক্ষতিসাধন করলে তার দায় ড্রোনের মালিককে বহন করতে হবে। ড্রোন যে স্থানে ওড়ানো হবে, সে স্থানের ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে অবহিত করতে হবে। ভূমি থেকে ২০০ ফুটের বেশি উচ্চতায় ড্রোন ওড়ানো যাবে না। যে কোনও বিমানবন্দরের ১০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে ড্রোন ওড়াতে হলে সংশ্লিষ্ট বিমানবন্দরের অ্যারোড্রম অপারেটরের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। একজন ব্যক্তি একসঙ্গে একাধিক ড্রোন ওড়াতে পারবেন না।
