এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছেড়েছে। ২৫ মে রাত সাড়ে ১১টা থেকে ডিম আহরণকারীরা ডিম সংগ্রহ করছেন। সকালে ডিম ছাড়ার বিষয়টি নজরে আসে জেলেদের। হালদা পাড়ের ডিম সংগ্রহকারী জহুর লাল বলেন, রাত সাড়ে ১১টায় জাল তুলে দেখি পাঁচ বালতির মত ডিম পেয়েছি। হালদা নদীর মাদের্শা ঘাটের রতন বলেন, আমি চার বালতি ডিম পেয়েছি।
হালদায় মা মাছ ডিম ছাড়ার সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুহুল আমিন বলেন, রাতে ডিম পাচ্ছেন জেলেরা। তবে এখন কম পরিমাণে পাচ্ছেন, রাত গভীর হলে আরো বেশি ডিম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ২৪ মে সন্ধ্যার পর থেকে বজ্রসহ প্রবল বর্ষণ শুরু হলে নদীর পাড়ে অবস্থান নেন ডিম আহরণকারীরা। সাধারণত, চৈত্র ও বৈশাখ মাসে প্রবল বর্ষণ হলে মা মাছ ডিম ছাড়ে। কিন্তু এবার বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকায় বৈশাখ মাসের মাঝামাঝিতে নদীতে মা মাছ অল্প পরিমাণ ডিম ছেড়েছিল। মা মাছ সাধারণত অমাবস্যা, অষ্টমী ও পূর্ণিমা তিথিতে নদীতে ডিম ছাড়ে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিয়মিত অভিযান চালিয়ে মা মাছ সংরক্ষণ, ডিম থেকে রেণু তৈরির কুয়া সংস্কার, কুয়ায় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থাসহ নানা উদ্যোগের কারণে হালদায় ডিম সংগ্রহের পরিমাণ এবার অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে। এ ব্যাপারে হালদার গবেষক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালেয়র প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, আমি রাতে হালদা নদীতেই রয়েছি। যা ডিম পাওয়া যাচ্ছে তা পযাপ্ত নয়। তবে আশা করছি, রাতে আরো ডিম পাওয়া যাবে।
এদিকে, মাছুয়া ঝর্ণা, শাহ মাদারি এবং মদুনা ঘাটসহ তিনটি হ্যাচারির ১০৮টি কংক্রিট ও ১০টি প্লাস্টিকের কুয়ায় হালদার ডিম সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হালদায় জেলেদের ডিম সংগ্রহে সর্বোচ্চ সহায়তা দিতে আগে থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসন।
হালদা থেকে ২০১৮ সালে ২২ হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৭ সালে এক হাজার ৬৮০ কেজি, ২০১৬ সালে ৭৩৫ (নমুনা ডিম) কেজি, ২০১৫ সালে দুই হাজার ৮০০ কেজি এবং ২০১৪ সালে ১৬ হাজার ৫০০ কেজি ডিম সংগ্রহ করা হয়। এবার আরো বেশি ডিম সংগ্রহ হবে বলে আশা প্রশাসনের।