ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যার মাঝামাঝি এলাকায় প্রচণ্ড শক্তিতে আছড়ে পড়েছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’। ঝড়টির বাতাসের গতিবেগ রেকর্ড হয়েছে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। ‘তিতলি’ আঘাত হানতেই অন্ধ্র প্রদেশের উত্তরাঞ্চল ও উড়িষ্যার দক্ষিণাঞ্চলে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে প্রাণহানির কোনো খবর মেলেনি।
নয়াদিল্লিভিত্তিক সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া ও এনডিটিভি জানায়, ঝড় উপকূলের দিকে এগিয়ে আসতেই শুরু হয় টানা বর্ষণ। আর আঘাত করার পর উড়িষ্যার গানজাম, গজপতি, পুরি, খুর্দ ও জগতসিংপুর জেলা এবং অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলামসহ বেশ কিছু জেলায় শুরু হয় ভূমিধস।
বিভিন্ন এলাকা থেকে সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদকরা জানাচ্ছেন, ঝড়ের পর বেশ কিছু সড়ক-মহাসড়কে গাছ-বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে পড়ে থাকতেও দেখা যায়। গোপালপুর ও বারহামপুর শহরের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে সর্বপ্রকার যোগাযোগ।উড়িষ্যার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পটনায়ক ঘূর্ণিঝড়ের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। তিনি এরইমধ্যে উপদ্রুত জেলাগুলোর কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষে পনিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্যদিকে অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন তার ঝড়কবলিত এলাকার কর্মকর্তাদের।
প্রতিবেদন বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতায় বুধবারই দুই রাজ্যের উপকূলীয় জেলাগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল থেকে তিন লাখেরও বেশি মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সকল স্কুল, কলেজ, চাইল্ডকেয়ার সেন্টারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী (এনডিআরএফ) ও উড়িষ্যা দুর্যোগ প্রশমন বাহিনী এরইমধ্যে ঝড়কবলিত এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখনও সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়নি। প্রয়োজন হলে সেদিকেও যেতে পারে সরকার।
এদিকে ‘তিতলি’র কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর। ১১ অক্টোবর দিবাগত রাতে বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা, ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।